বিনোদন ডেস্ক। সময়ের কাগজ -ঃ
আমি খুব ভালো বেঁচে আছি
ছদ্ম সংসারে কানামাছি।
যাকে পাই তাকে ছুঁই, বলি
কেন যাস এ গলি ও গলি?
বরং একবার অকপট
উদাসীন খুব হেসে ওঠ্
শুনে ওরা বলে, এটা কে রে
তলে তলে চর হয়ে ফেরে?
এমন কী সেদিনের খোকা
আঙুল নাচিয়ে বলে বোকা!
সেই থেকে বোকা হয়ে আছি
শ্যামবাজারের কাছাকাছি।
======= বোকা। শঙ্খ ঘোষ।
শঙ্খ ঘোষ। ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ সালে অবিভক্ত ভারত বর্তমান বাংলাদেশের চাদঁপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে ভারতের একজন শক্তিমান বাঙালি কবি ও সাহিত্য- সমালোচক। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবেও প্রসিদ্ধ ছিলেন বেশ। তিনি ছিলেন কাব্য সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ দাশের উত্তরসূরী।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন শিক্ষকতাকে। কবি, প্রাবন্ধিক, রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ ও সাহিত্য সমালোচক হিসেবে পরিচিতি ছিলো চোখে পরার মতো। ব্যক্তি জীবনে দাম্পত্য সঙ্গী করেন প্রতিমা ঘোষকে।
বাবরের প্রার্থনা কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার গদ্যগ্রন্থ “বটপাকুড়ের ফেনা” ২০১৬ সালে ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম হল মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, উর্বশীর হাসি, ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি। তিনি শঙ্খ ঘোষ নামে অধিক পরিচিত হলেও তাঁকে অন্য নামও গ্রহণ করতে দেখা যায়। দশম-একাদশ শতকের সংস্কৃত আলংকারিক কুন্তক- এর নাম তিনি গ্রহণ করেছেন নিজের আরেকটি ছদ্মনাম হিসেবে। আবার শুভময় নামটিও তাকে ব্যবহার করতে দেখা যায়।
তাঁর লেখালেখি জীবনে
পদ্মভূষণ-২০১১, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার-২০১৬, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার-১৯৭৭
এ ভূষিত হন তিনি। তাঁর প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। শঙ্খ ঘোষ সারা জীবন শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বঙ্গবাসী কলেজ, জঙ্গীপুর কলেজ, যাদবপুর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (শিমলা), দিল্লি ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে অধ্যাপনা করেছেন।
এই গুণী মানুষটি গত ১০ এপ্রিল’২১ মারন ব্যাধি কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হন বলে পরীক্ষায় ধরা পড়ে। এরপরে তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন এবং ২১ এপ্রিল’২১ তারিখে কলকাতায় তাঁর নিজ বাড়িতে সকাল সাড়ে এগারোটা ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন তিনি। আজ তাঁর ৯২তম জন্মদিনে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।