ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

বরুণ কান্তি মন্ডল, খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি।

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক/২০২৩ এ খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হ য়েছেন পাইকগাছা উপজেলাধীন ৪নং দেলুটি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত তেলিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিলন সরকার। তিনি পিতা- বিনয় কৃষ্ণ সরকার ও মাতা- কবিতা রানি সরকারের জেষ্ঠ পুত্র। তিনি ১৯৮৩ সালে শিবসা নদী তীরবর্তী দেলুটি গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। দেলুটি-জিরবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি শিক্ষা জীবনের প্রাথমিক স্তর সম্পন্ন করেন। শিক্ষার পরবর্তী স্তরগুলোতে তিনি বিজ্ঞান বিভাগে- দারুণমল্লিক ডি, এইচ, কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি; বটিয়াঘাটা কলেজ থেকে এইচ, এস, সি এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি,এসসি (অনার্স) ও এম,এস (মাস্টার্স) ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০১০ সালে জীবনের প্রথম ভাইভা মোকাবেলা করেই তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি পেতে সক্ষম হন।

বর্তমানে তিনি বহুগুণে গুনান্বীত একজন সৃজনশীল শিক্ষক হিসাবে তেলিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। শিক্ষকতা পেশাটির প্রতি তার আগ্রহ যেন আগে থেকেই ছিল। জানা যায়, চাকরি পাওয়ার অনেক আগেই ভার্সিটিতে অধ্যয়নরত অবস্থায়, তিনি নিজ গ্রামে এসে, ছুটে যেতেন পার্শবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে অনুরোধ করে অনুমোতি নিয়ে শিশুদের পড়ানো শুরু করতেন। শিশুদের প্রতি গভীর ভালোবাসাই হয়তো শিক্ষকতা পেশায় তার এই সফলতার চাবিকাঠি।

বাবা কৃষক আর মা গৃহিনী। অর্থিক সংকটের কারণে গরীব পিতা-মাতা কখনো কখনো পাড়াপড়শীর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েও মিলন সরকারের পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছেন। আজ তাদের পুত্র মিলন সরকারের সাফল্যে তাঁরা অনেক খুশি হয়েছেন। তারা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

মিলন সরকার তার এই সাফল্যের জন্য প্রথমত কৃতজ্ঞতা জানান তার পূর্ব-পুরুষ এবং তার পিতা-মাতাকে, যাদের কাছ থেকে জন্মগত ভাবে তিনি তার মেধা ও মানসিকতা পেয়েছেন। তিনি তার সেই মেধার বিকাশ ঘটানোর জন্য সর্বস্তরের শিক্ষাগুরুদের প্রতিও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তার বর্তমান কর্মস্থল তেলিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলামের কথা বলতে গিয়ে জানান, এমন একজন প্রধান শিক্ষকের অধীনে কাজ করতে পেরে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করেন। প্রধান শিক্ষক তার পেশাগত উন্নয়নের জন্য দারুণ ভাবে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আরও জানান, পেশাগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বিশেষ করে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব দেবাশীষ দাশ এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। এছাড়াও তিনি বিজ্ঞ বিচারক মণ্ডলী ও শুভাকাঙ্খীসহ সংশ্লীষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

মিলন সরকার আরও জানান তিনি তার এই প্রাপ্তির মান অক্ষুন্ন রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে যাবেন। শিশুদের শিক্ষা নিয়ে তিনি বিভিন্ন গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবেন। তিনি যেন আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে একজন সহযোদ্ধা হিসাবে কাজ করে যেতে পারেন এবং শিক্ষার্থীদেরকে প্রয়োজনীয় জ্ঞানসম্পন্ন আধুনিক, স্মার্ট ও আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে পারেন তার জন্য সকলের সহযোগিতা ও দোয়া/আশির্বাদ কামনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »